আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। দলের নেতাদের অনেকে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, আওয়ামী লীগ কি রাজনীতিতে ফিরতে পারবে? ফিরলে কীভাবে এবং কোন কৌশলে?
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, শেখ হাসিনা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি মনে করেন, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারে, আবার হতাশাও নিয়ে আসতে পারে। আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে প্রাথমিকভাবে জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার কথা ছিল। তবে, বাইডেন নির্বাচনে অংশ না নিয়ে কমালা হ্যারিসকে সমর্থন দেওয়ায় নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, এবং যুক্তরাষ্ট্র বারবার সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে। আওয়ামী লীগ এই চাপকে স্বৈরাচারীভাবে অবজ্ঞা করেছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, যদি রিপাবলিকান শিবির জয়ী হয়, তবে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন অবস্থান অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে ট্রাম্প জয়ী হলে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে এবং ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এদিকে, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর সেখানে তার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার কূটনৈতিক পাসপোর্টে থাকার নির্ধারিত ৪৫ দিন পেরিয়ে গেছে, এবং তিনি কীভাবে সেখানে অবস্থান করছেন, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জানতে চেয়েছে। শোনা যাচ্ছে, শেখ হাসিনা একটি ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট পেয়েছেন যা দিয়ে তিনি তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয়ের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে গ্রহণ করা হয়নি এবং তাকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এদিকে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশে গণহত্যার দায়ে অনেক মামলা দায়ের হয়েছে এবং এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হতে যাচ্ছে। যদি পরোয়ানা জারি হয়, তবে বাংলাদেশ তাকে ফিরিয়ে আনতে চাইতে পারে, যার ফলে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে নতুন করে টানাপড়েন হতে পারে।
দলীয় সূত্রের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের অনেক বিষয় পরিষ্কার হতে পারে, এবং শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন নাকি অবস্থান পরিবর্তন করবেন, সেটাও নির্ধারণ হতে পারে।